বাতাসের মাধ্যমেই সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে সংক্রামক সার্স কোভ-২ ভাইরাসের বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট। ফলে আঁটোসাঁটো ভাবে মাস্ক পরা এবং বদ্ধ পরিবেশ এড়িয়ে হাওয়া চলাচলের সুব্যবস্থা করা ছাড়া এই সঙ্কট এড়ানো সম্ভব নয়। আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এমনটাই।
ওই গবেষণায় অনুযায়ী, সংক্রমিতদের ছাড়া প্রত্যেকটি নিঃশ্বাসে সংক্রামক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। ভাইরাসের মূল ভেরিয়েন্টের তুলনায় আলফা ভেরিয়েন্টে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই মাত্রা ৪৩ থেকে ১০০ গুণ বেশি। ‘ক্লিনিক্যাল ইনফেকসাস ডিজ়িজ়েস’ নামে পত্রিকায় প্রকাশিত এই রিপোর্ট আরও জানাচ্ছে, সার্জিক্যাল মাস্ক এবং ঢিলাঢালা পোশাক পরলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। গবেষণাটি মূলত আলফা ভেরিয়েন্টকে নজরে রেখে করা হলেও সম্প্রতি আতঙ্ক ছড়ানো ডেল্টা স্ট্রেনের ক্ষেত্রেও এই নিরীক্ষণ কার্যকর বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে তাদের টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাও গড়ে তুলতে সক্ষম। ট্রায়ালে এমনটাই উঠে এসেছে বলে সোমবার এক বিবৃতি দিয়ে জানাল আমেরিকান প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থা ফাইজ়ার। এর ভিত্তিতে খুব দ্রুত তারা নিয়ামক সংস্থার কাছে টিকাটি ওই বয়সসীমার ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনুমতির আবেদন জানাবে বলেই জানা গিয়েছে।
বায়োএনটেকের তৈরি ফাইজ়ার সংস্থার এই টিকাটি বর্তমানে ১২ বছর এবং তার ঊর্ধ্বদের দেওয়া হচ্ছে আমেরিকায়। তবে ৫-১১ বছর বয়সিদের জন্য টিকার ডোজ়ের মাত্রা খানিকটা কম থাকবে বলেই ফাইজ়ার সূত্রে খবর। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ এবং আমেরিকা, দুই জায়গাতেই এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিনগত পরিব্যক্তির কারণে করোনাভাইরাস ক্রমশই মারণক্ষমতা হারাচ্ছে। এমনটাই দাবি টিকা নির্মাতা সংস্থা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষক ডেম সারা গিলবার্টের। তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের নয়া প্রজাতিগুলির প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার ক্ষমতা অনেকটাই কম।’’ আগামী দিনেও করোনাভাইরাসের ‘দুর্বল’ হওয়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেছেন ডেম। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষণাগার ‘জেনার ইনস্টিটিউট’-এর প্রধান ডেম বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত এটি সাধারণ জ্বরের (ফ্লু) ভাইরাসের স্তরেই চলে আসবে।’’ বৃহস্পতিবার ‘রয়্যাল সোসাইটি অফ মেডিসিন’-এর আলোচনাসভায় তাঁদের গবেষণার কথা জানিয়ে ডেম বলেছেন, ‘‘জিনের পরিব্যক্তির কারণে ভবিষ্যতে আরও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় নেই।’’ ডেম জানিয়েছেন, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের প্রাণঘাতী ক্ষমতা কমতে থাকে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তবে ‘নির্বিষ’ হয়ে পড়লেও ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা কমার সম্ভাবনা তেমন নেই বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেক...

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন