বৃষ্টি কমলেও আশঙ্কা কাটছে না দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। টানা দু’দিন প্রবল বৃষ্টির জেরে ব্যারাজগুলিতে জল বেড়েছে। নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। কোথাও আবার নদীর জল গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত করেছে। ফলে বৃষ্টির পর নতুন করে আতঙ্ক ধরাচ্ছে ব্যারাজ থেকে ছাড়া জল। আর তাতেই বানভাসি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলা— হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়ায়।
এই মুহূর্তে নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডে অবস্থান করার ফলে সেখানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টির জল এ রাজ্যের দিকে নেমে আসছে। ফলে ব্যারাজগুলির উপর চাপ বাড়ছে। সেই চাপ কমাতে ব্যারাজগুলি থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। যার ফলে নতুন করে বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর তাতেই চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে জেলা প্রশাসনগুলির। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জেলা প্রশাসনগুলিকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
শুক্রবার সকালেই মাইথন জলাধার থেকে ৮০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্য দিকে, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দেড় লক্ষে কিউসেকেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। ফলে নতুন করে হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। নদীবাঁধ পরিদর্শন করেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা। গত জুলাই-অগস্টে ভয়াবহ বন্যার ফলে নদীবাঁধ-সহ বেশির ভাগ জায়গার ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদয়নারায়ণপুরের পাশাপাশি হুগলির আরামবাগ, খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ঝাড়খণ্ড, দুর্গাপুর এবং আসানসোলে প্রবল বৃষ্টি কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা এলাকায়। শুক্রবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর ব্লকের অন্তর্গত কল্লা, ছত্রপুর, গুন্দুরিয়া-সহ বিস্তীর্ণ গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কান্দি-ভরতপুর রাজ্যে সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। দুর্গাপুর, ম্যাসেঞ্জোর ও তিলপাড়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
পূর্ব মেদিনীপুরের অনেক জায়গায় জলছবিটা আগের মতোই রয়েছে। ভগবানপুর, এগরা, পটাশপুর এলাকাতে জল যন্ত্রণা থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি বাসিন্দাদের। অভিযোগ, কেলেঘাইয়ের বাঁধ মেরামতি এতটাই ঢিমেতালে চলছে যার জেরে এখনও বেশ কিছু জায়গা থেকে গ্রামে জল ঢুকছে। ইতিমধ্যেই ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, কেলেঘাইয়ের বাঁধ মেরামতিতে কিছুটা সময় লাগলেও দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার ফলে ঘাটাল মহকুমা নতুন বানভাসি হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ঘাটালের মনসুখা গ্রামে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হয়েছিল স্থানীয়দের। অন্য দিকে, বৃষ্টির কারণে পুরসভার বেশ কিছু এলাকাতে আগেই জল জমে ছিল। সেই সব এলাকা আবার নতুন করে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “ঘাটালের নদীগুলিতে জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বসনছরা গ্রাম এবং দাসপুর ব্লকে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষজন।
জিনগত পরিব্যক্তির কারণে করোনাভাইরাস ক্রমশই মারণক্ষমতা হারাচ্ছে। এমনটাই দাবি টিকা নির্মাতা সংস্থা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষক ডেম সারা গিলবার্টের। তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের নয়া প্রজাতিগুলির প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার ক্ষমতা অনেকটাই কম।’’ আগামী দিনেও করোনাভাইরাসের ‘দুর্বল’ হওয়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেছেন ডেম। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষণাগার ‘জেনার ইনস্টিটিউট’-এর প্রধান ডেম বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত এটি সাধারণ জ্বরের (ফ্লু) ভাইরাসের স্তরেই চলে আসবে।’’ বৃহস্পতিবার ‘রয়্যাল সোসাইটি অফ মেডিসিন’-এর আলোচনাসভায় তাঁদের গবেষণার কথা জানিয়ে ডেম বলেছেন, ‘‘জিনের পরিব্যক্তির কারণে ভবিষ্যতে আরও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় নেই।’’ ডেম জানিয়েছেন, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের প্রাণঘাতী ক্ষমতা কমতে থাকে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তবে ‘নির্বিষ’ হয়ে পড়লেও ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা কমার সম্ভাবনা তেমন নেই বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেক...


মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন