আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির স্কুলপড়ুয়াদের অনেকেই পরিবারের প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। অনলাইন ক্লাস তারা যদিও বা করতে পারছে, সেই পড়া বাড়িতে দেখিয়ে দেওয়ার মতো কেউ নেই অধিকাংশেরই। গৃহশিক্ষকের কাছে ছেলেমেয়েদের পড়ানোর সামর্থ্যও নেই ওই সব পরিবারের। এই ধরনে পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন জেলায় করোনা বিধি মেনেই কিছু কোচিং ক্লাসের আয়োজন করেছে শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)। সেখানে পড়ানো হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
প্রায় দু'বছর স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের উপরে যে-প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। বার বার উঠে এআসছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সঙ্গে নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের ফারাক। অনলাইন ক্লাসের জন্য জরুরি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার না-থাকায়, বাড়িতে পড়াশোনা করার পরিবেশের অভাবে বা অতিমারিতে কাজ হারিয়ে অভিভাবকেরা পড়ানোর সামর্থ্য হারিয়ে ফেলায় স্কুলছুট হয়েছে বহু ছেলেমেয়ে। যারা এখনও কোনও মতে পড়া চালিয়ে যাচ্ছে, হরেক প্রতিকূলতা রয়েছে তাদেরও। এই ধরনের পড়ুয়াদের সাহায্য করতেই বিকল্প পাঠদানের জন্য তাদের এই উদ্যোগ বলে জানাচ্ছে এবিটিও।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন বলেন, “কোভিড বিধি মেনে, শিক্ষকদের টিকা দিয়ে, অন্তত রোটেশন পদ্ধতিতেও স্কুল খোলার আবেদন আমরা বহু বার জানিয়েছি শিক্ষা দফতরের কাছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই নিজেরাই বাচ্চাদের সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছি।” কলকাতার পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ইত্যাদি জেলায় ৩৭টি কেন্দ্রে চলছে এই পাঠদান। কোথাও পড়ানো হচ্ছে নবম-দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের, কোথাও আবার পড়ানো হচ্ছে একেবারে নিচু ক্লাস থেকেই। সংগঠনের শিক্ষকেরা বিনামূল্যেই সব বিষয় পড়াচ্ছেন।
সুকুমারবাবু বলেন, “কোনও কোনও এলাকায় শতাধিক পড়ুয়া আসছে। কোভিড বিধি মেনে তাদের কয়েকটি দলে ভাগ করে এবং বড় জায়গা জুড়ে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকেরা।” উদ্দেশ্য, এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে অন্তত কিছু দরিদ্র শিশুকে পড়াশোনার মধেযে ফিরিয়ে আনা। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনও। এমন প্রচেষ্টার কথা ভাবছে তারাও। তবে ওই সব সংগঠন জানাচ্ছে, এর বিস্তার বাড়াতে প্রয়োজন সরকারি সাহায্যের।
জিনগত পরিব্যক্তির কারণে করোনাভাইরাস ক্রমশই মারণক্ষমতা হারাচ্ছে। এমনটাই দাবি টিকা নির্মাতা সংস্থা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষক ডেম সারা গিলবার্টের। তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের নয়া প্রজাতিগুলির প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার ক্ষমতা অনেকটাই কম।’’ আগামী দিনেও করোনাভাইরাসের ‘দুর্বল’ হওয়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে দাবি করেছেন ডেম। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার গবেষণাগার ‘জেনার ইনস্টিটিউট’-এর প্রধান ডেম বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত এটি সাধারণ জ্বরের (ফ্লু) ভাইরাসের স্তরেই চলে আসবে।’’ বৃহস্পতিবার ‘রয়্যাল সোসাইটি অফ মেডিসিন’-এর আলোচনাসভায় তাঁদের গবেষণার কথা জানিয়ে ডেম বলেছেন, ‘‘জিনের পরিব্যক্তির কারণে ভবিষ্যতে আরও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় নেই।’’ ডেম জানিয়েছেন, বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসের প্রাণঘাতী ক্ষমতা কমতে থাকে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তবে ‘নির্বিষ’ হয়ে পড়লেও ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা কমার সম্ভাবনা তেমন নেই বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেক...

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন